শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

হেফাজতের আগামী কোন পথে

হেফাজতে নতুন নেতা

হেফাজতে নতুন নেতা

শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০

 

 

২৭৮ বার পড়া হয়েছে

প্রিয় পাঠক নিউজঃশেষ হয়েছে হেফাজতে ইসলামির সম্মেলন।দলের ঝান্ডা এখন জুনায়েদ বাবুনগরীর হাতে। তার সমর্থিতরাই এখন হেফাজতের নেতুৃত্বে।সব কিছু দেখলে মনে হবে এখানেই শান্তিপূর্ণ
ভাবে হেফাজতের সম্মেলনের পরিসমাপ্ত ঘটেছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি তা বলছেনা।
সংগঠনের অবিসংবাদিত নেতা প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফি যুগের পর দল আবার নতুন মেরুকরণের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মত রাজনৈতিক বিজ্ঞমহলের। তাদের মতে অরাজনৈতিক সংগঠন তকমা লাগানো দলটিতে নতুন করে কোন্দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে।অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে হেফাজতে ইসলামে বাবুনগরী গ্রুপ ইন, শফি গ্রুপ আউট বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠার এক দশক পর রবিবার হাটহাজারিতে হয়ে গেল হেফাজতে ইসলামির প্রথম সম্মেলন। আল্লামা শফি সমর্থিতরা এই সম্মেলন বয়কট করেছে।তাদের রাখাও হয়নি নতুন ঘোষিত কমিটিতে।তাই বলে তারা বসে থাকছেনা। হেফাজতের একটি সেূ্েও জানা গেছে আহমদ শফি সমর্থিতরা পাল্টা কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছে।কারণ হেফাজতে ইসলামীতে আহমদ শফির একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে।সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা কয়েক হাজার কওমী মাদ্রাসায় তার রয়েছে একটি প্রভাব।শফি সমর্থিতরা সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা শুরু করছে।সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে দুপক্ষের কর্ম কান্ডই নির্ধারণ করে দিবে হেফাজতের আগামীর গতিপথ।

সাম্প্রতিক কালে রাজনীতির মাঠে অন্যতম আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ানো হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বের পরিবর্তন আসছে।যদিও আমির নির্বাচন কে ঘিরে হেফাজতে ভাংগনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।কোনঠাসা হয়ে পড়েছে আহমদ শফি গ্রুপ।ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে মহাসচিব জুনায়েদ বাবু নগরী সমর্থিতরা।।হেফাজতের নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আছে ব্যাপক কৌতুহল।

এ সম্মেলন থেকে দৃশ্যত বাদ পড়েছেন প্রয়াত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানী এবং তার অনুসারীরা। তারা এ সম্মেলনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে হেফাজত নেতাদের একাংশ এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তারা বলছেন, সারা দেশ থেকে নেতারা এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
তাদের মতামতের ভিত্তিতেই নতুন নেতা নির্বাচিত হবেন।
হেফাজত হেডকোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত হাটহাজারীতে এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। আর সম্মেলন পরিচালনা করবেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। এ সম্মেলনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন হেফাজত নেতা মাঈনউদ্দিন রুহী। তিনি আনাস মাদানীর ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিত। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, কোন কমিটিতে আলোচনা ছাড়া ব্যক্তির রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের কারণে অবৈধভাবে এই সম্মেলন করা হচ্ছে। যেদিন হেফাজত গঠন হয়েছে, সেদিন থেকেই আমি এর যুগ্ম মহাসচিব। হেফাজতের কাউন্সিল করার জন্য এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটিতে কোন আালোচনা বা কোন মিটিং কখনও করা হয়নি। এটা একজন ব্যক্তির আমীর হওয়ার জন্য এবং রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ হাসিল করার জন্য এই কাউন্সিল করা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তবে তার এই বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি জানান বৈধভাবে সম্মেলন আহ্বান করেই নতুন নেতা নির্বাচন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা অভিযোগ করে, তারা আসলে হেফাজতের এই উত্থান সম্পর্কে জনগণকে বা আমাদের কর্মীদের বিভ্রান্ত করে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য চেষ্টা করছে। যাদের ব্যাপারে হেফাজতের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ, তাদেরকে তো হেফাজতের কমিটিতে রাখার সুযোগ নাই।
সাত বছর আগে রাজনীতির দৃশ্যপটে আসা অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম নানা সময়ে আলোচনায় এসেছে। দীর্ঘ দিন থেকে আল্লামা আহমদ শফী ছিলেন সংগঠনটির একক নেতা। কিন্তু ছেলে আনাস মাদানীর নানা কর্মকান্ড ঘিরে হেফাজত আমীরের সঙ্গে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়। সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিও ছিল আলোচনায়। গত সেপ্টেম্বরে হাটহাজারী নজিরবিহীনভাবে সরব হয় আল্লামা আহমদ শফী ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে আন্দোলনের মুখে
মাদ্রাসা থেকে বাদ পড়েন তারা। এরপরপরই আল্লামা আহমদ শফী মৃত্যুবরণ করেন।
সে থেকে হেফাজতের আমীর কে হচ্ছেন তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। তবে এখন হেফাজত ঐক্যবদ্ধ থাকে কি-না সে আলোচনাও জোরদার হচ্ছে। কওমি ভিত্তিক এই সংগঠনটি নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা মহলের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব নির্বাচন ঘিরে অথবা সংগঠনটি ঘিরে নাটকীয় কিছু ঘটে কি-না তাই হবে দেখার বিষয়।

ট্যাগ :

আরো পড়ুন