শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

টাইগার শোয়েবের কষ্ট

টাইগার শোয়েবের কষ্ট

টাইগার শোয়েবের কষ্ট

বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

 

 

১৬১ বার পড়া হয়েছে

প্রিয় পাঠকঃদৃশ্যটা কল্পনা করুণ- নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, প্রবেশ করতে চাইছেন চেনা আঙিনায়, অথচ মিলছে না অনুমতি! রাগে-দুঃখে কাতর হয়ে যাওয়াটাই তো তখন স্বাভাবিক। ঠিক এই অবস্থাটাই হয়েছে শোয়েব আলীর। বাংলাদেশের ক্রিকেটের যারা খোঁজ খবর রাখেন তাদের কাছে তিনি অবশ্য ‘টাইগার শোয়েব’ কিংবা ‘বাঘ মামা’ নামেই পরিচিত। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের আইকনিক সাপোর্টারটিই কি না প্রবেশ করতে পারছেন না মিরপুরের শেরে-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

করোনার এই সংক্রমণের সময়ে ক্রিকেট মাঠের দরজা বন্ধ শোয়েবের জন্য। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে মিরপুরের শেরেবাংলার গ্যালারিতে বসে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। মঙ্গলবার সিরিজের প্রথম ম্যাচটা তাই দেখলেন স্টেডিয়ামের পাশের একটা উঁচু বিল্ডিংয়ের ছাদে দাঁড়িয়ে। সেই চেনা বাঘ সেজে হুংকারও দিলেন। বাংলাদেশের জয়ে একাত্মও হলেন। কিন্তু কোথায় যেন বুকের গহীনে একটা কষ্ট পুড়িয়ে মারল তাকে।

এমন দিন, এমন দৃশ্য দেখতে হবে স্বপ্নেও ভাবেননি শোয়েব। শুধু ক্রিকেট দলকে সমর্থনের নেশাটা বাঁচিয়ে রাখতে যিনি এখন রাইড শেয়ারিং সার্ভিস উবারের চালক সেই মানুষটি পারলে এখন হাও মাও করে কাঁদেন! জলের মাছ ডাঙ্গায় আসলে যেমন ছটফট করে তারও অবস্থা হয়েছে তেমন। ঢাকা পোস্টকে বললেন সেসব দুঃখের কথা-

এমন দিন আসবে, ধারণাও করি নাই ভাই। ২০১০-১১ সালের দিকে প্রথম দাঁড়িয়েছিলাম মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গেটে গিয়ে। সেই দৃশ্যটা পরশু দিন পেয়ে গেলাম। সেদিন যে ফিরে পাবো, কল্পনা করতে পারি নাই। নিজের ঘর, নিজের সবকিছু, তাও ঢুকতে পারছি না, যেতে পারছি না গেটের ভেতরে। এর চেয়ে কষ্ট আর কী আছে। বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। পারি নাই শুধু হাও মাও করে কাঁদতে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আমাকে অনুমতি দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা সিরিজেও ছিলাম। গতকালকে যেটা হইছে, তারা আমার জন্যই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কালকে (মঙ্গলবার) যেটা হয়েছে কাঁচে ঘেরা বক্স আছে, সেখানে বসে খেলা দেখতে বলেছিল। কিন্তু ওখান থেকে কোনো সাউন্ড করা যাবে না। পতাকা উড়ানো যাবে না। আমার মন প্রাণ সবকিছু তো পতাকা। বাংলাদেশ যখন জিতবে, অস্ট্রেলিয়ার উইকেট যাবে। তখন আমি লাফ দেবো, চিৎকার করব, পতাকা উড়াবো। এগুলো করা যাবে না, তারপর নরমাল পোষাক পরে যেতে হবে। সব মিলিয়ে চিন্তা করে দেখলাম ওই জায়গায় আমি দম আটকে মরে যাবো। খাঁচায় পোষা পাখির মতো অবস্থা হবে আমার। দূর থেকে হলে একটু সাউন্ড করে, মনের ফিলিংসটা জানাতে না পারলে কী চলে!

কেউ তো আর নিয়মের বাইরে যাবে না। আমারও সেই সুযোগ ছিল না। কারণ অস্ট্রেলিয়া কঠিন শর্ত দিয়েছে উপায় ছিল না। তখন আমি ভাবলাম আশেপাশে যে বিল্ডিং, ওখান থেকে খেলা দেখা যায়। ওখানে গিয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ আছে। অনুমতি দেয় না বাড়িওয়ালারা। যেখানে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা যেখানে দেখলাম, সেখানে ওই বাসায়ও উঠতে দেবে না। পরে একটা টিভি চ্যানেলের অনুরোধে উঠতে দিল। ১২ তলা একটা ভবনে উঠেছি। লিফট নেই বলে হেঁটেই উঠতে হয়েছে। কিন্তু বিশ্বাস করেন বাংলাদেশের খেলা দেখে সেই কষ্ট একদম চলে গেছে।

ট্যাগ :

আরো পড়ুন