শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চবি ছাত্রীকে হেনস্তা : মূল হোতা আজিমসহ গ্রেপ্তার ৪ জন

চবি ছাত্রীকে হেনস্তা : মূল হোতা আজিমসহ গ্রেপ্তার ৪ জন

চবি ছাত্রীকে হেনস্তা : মূল হোতা আজিমসহ গ্রেপ্তার ৪ জন

শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০২২

 

 

৯৩ বার পড়া হয়েছে

প্রিয় পাঠকঃচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত মূল হোতা আজিম সহ ৪ জন ধরা পড়েছে।তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আজিম (২৩), হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নুর হোসেন ওরফে শাওন (২২), চবির নৃবিজ্ঞান বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. নুরুল আবছার ওরফে বাবু এবং হাটহাজারী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মাসুদ রানা ওরফে মাসুদ (২২)। আজিমের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায়, শাওনের হাটহাজারীর ফতেপুর ইউনিয়নে, আবছারের ফেনীর পশুরামে ও মাসুদের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলায়।

শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে র‌্যাব-৭-এর চট্টগ্রামের চাঁন্দগাও ক্যাম্পে বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ এ কথা বলেন ।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব অধিনায়ক জানান, ওইদিন আনুমানিক ১০টা ১৫ মিনিটে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুর পথরোধ করে ‘এত রাতে বাইরে কেন’ জানতে চেয়ে মারধর শুরু করে। তখন ছাত্রীটির বন্ধু বাধা দিলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। একপর্যায়ে আসামিরা ভুক্তভোগী ও তার বন্ধুকে জোর করে বেগম ফজিলাতুন নেছা হলের পেছনে নিয়ে যায়। এ সময় জিজ্ঞেস করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সেশনে ও বিভাগে পড়াশোনা করেন। আসামিরা ওই ছাত্রীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে।

র‍্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ বলেন, শুক্রবার ঘটনার মূল অভিযুক্ত আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং স্থানীয়। তার নেতৃত্বে পুরো ঘটনা ঘটেছে। তাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা বাকিদের নাম পাই।

র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক বলেন, অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, সেদিন রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী তার এক ছেলে বন্ধুসহ হলের দিকে ফিরছিলেন। আজিম ও তার গ্রুপটি মোটরসাইকেল নিয়ে রাতে ঘোরাঘুরি ও আড্ডা দিতে থাকে। মোটরসাইকেল দুটি ছিল সাইফুল ও শাওনের। ঘোরাঘুরির সময় হঠাৎ তাদের নজরে আসে, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিক থেকে হেঁটে আসছে, জায়গাটি একটু নির্জন। শুরুতে তারা গিয়ে ভুক্তভোগীদের চার্জ করেন। ছাত্রীর ছেলে বন্ধুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন না। অভিযুক্তরা তাদের কাছে গিয়ে এত রাতে বাইরে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করেন। ছেলে বন্ধুর কাছে দাবি করা হয় চাঁদা। একপর্যায়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। তখন তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ছয়জন তাদের ওপর আরও বেশি চড়াও হয়। ছেলেটিকে আটকে রেখে মেয়েটিকে তারা নির্যাতন করে। প্রথমে চড়-থাপ্পড় মারে, তারপর বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে।

ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ ও টাকা পয়সা নিয়ে নেওয়ার পর তারা (জড়িতরা) ঘটনাস্থল ত্যাগ করে জানিয়ে র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, তখন ভুক্তভোগীরা একটি হলে গিয়ে এক ছাত্রের মোবাইল থেকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানায়।

ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত না দাবি করে তিনি বলেন, এখানে আমরা কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাইনি। যার নেতৃত্বে ঘটনা ঘটেছে, আজিম, সে অকপটে বলেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তাৎক্ষণিক। কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না বা মেয়েটিকে টার্গেট করার কোনো প্ল্যান ছিল না। এমনকি মেয়েটিও আমাদের বলেছে, সে আজিমকে আগে থেকে চিনত না।

আজিমের বিষয়ে তিনি বলেন, আজিম যেহেতু এলাকায় অবস্থান করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, এই কারণে এলাকায় তার প্রভাব ছিল। এই প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে সে হয়তো ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জেনেছি। এগুলো তদন্ত করে আমরা বের করব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযুক্ত সবাই বলছে তারা ছাত্রলীগ সমর্থন করে। সমর্থন তো যে কেউ করতে পারে। কিন্তু তাদের কোনো পদ-পদবি নেই। তারা যেটা বলছে যে, তাদের মধ্যে দুই গ্রুপেরই সমর্থক রয়েছে। এখানে নির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের কেউ না। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী একেকজন একেক গ্রুপ সমর্থন করে। সমর্থন করা মানেই আমি বলতে পারি না যে, তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সমর্থন তো যে কেউ করতে পারে, জনসাধারণ হিসেবে তার অধিকার রয়েছে।

ট্যাগ :

আরো পড়ুন