ফরিদ মোহাম্মদ:
তীব্র তাপদাহের পর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিন ধরে কক্সবাজারে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে উত্তাল রয়েছে বঙ্গোপসাগর। এ কারণে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার ট্রলারসমুহকে উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে বৈরি আবহাওয়ায় সাগরে কিছু ট্রলার কূলে ফিরে আসলেও অধিকাংশই আসেনি। ফলে গভীর সাগরে আটকে পড়েছে হাজারো জেলে। সাগর উত্তাল থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে মাঝি-মাল্লারা। এতে উদ্বিগ্ন রয়েছে তাদের পরিবার পরিজন।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (ফিশারী ঘাট) গিয়ে দেখা যায়, অর্ধশত ফিশিং বোট নোঙর করেছে। সোমবার ভোর সকাল থেকে এসব বোট কূলে ফিরে।
ফিরে আসা জেলে রায়হান উদ্দিন জানান, এখনো সাগরে অনেক বোট রয়ে গেছে। আটকে আছে হাজারো জেলে। তাদের জন্য চিন্তা করছে পরিবার। আমাদের সাথে যাওয়া খুরুশকুলের নুরুল আমিন বহদ্দারের ফিশিং ট্রলার ফিরেনি।
জেলে আবুল বশর জানান, ২ দিন আগে গভীর সাগরে যান তিনি। কিন্তু হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় ফিরে আসতে হয়েছে। সাথে অল্প মাছও পেয়েছে তার বোট। তাদের সাথে ১৫ টির মতো বোট ফিরে এসেছে। তবে অনেক বোট এখনও সাগরে রয়ে গেছে।
মো. হারুন নামের আরেক জেলে জানান, আবহাওয়ার খারাপ জেনে রোববার রাতে তারা ফিরে আসে। কিন্তু এখনো অনেক বোট বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে সাগরে মাছ আহরণে ব্যস্ত রয়েছে। সাগর থেকে না ফেরায় জেলেদের পরিবারগুলো উৎকণ্ঠায় আছে। সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করছে যাতে সবাই সহি সালামতে ফিরে আসে।
কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, কক্সবাজারে গত দুই দিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে সাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতা সংকেত জারি এবং সাগর উত্তাল হওয়ায় বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরারত জেলেরা ট্রলার নিয়ে রোববার সন্ধ্যা থেকে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকুলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরের উপর দিয়ে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
লঘুচাপের কারণে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছধরার ট্রলারসমূহকে উপকুলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।