wordpress-seo
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/preyopathok/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114advanced-ads
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/preyopathok/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114জাকারিয়া কাজিঃ
সন্তানেরা মায়ের নাড়িছেঁড়া ধন। নাড়ির টানকে কেউ বেঁধে
রাখতে পারেনা। প্রবাস জীবন থেকে ফিরে এসে আমিও বুঝেছিলাম,সন্তানকে কাছে পেতে মায়েরা কত ব্যাকুল হন, কাতর হন। মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে সন্তানেরাও খুঁজে পায় রাজ্যের সব প্রশান্তি।
দীর্ঘ সময় পর বিদেশ যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। পুত্র তারেক রহমানের সান্নিধ্য গেলে তিনি অনেকটাই সুস্হ হয়ে উঠবেন—এতে কোন সন্দেহ নেই। তাছাড়া পুত্রবধু ও প্রিয় নাতনীদের ভালবাসা তাঁর শরীরে এন্টিবায়োটিকের কাজ করবে।দেশে ফিরে মাকে জিজ্ঞেস করলে মা চোখ মুছতেই বলেছিলেন,”সন্তানদের সান্নিধ্যে এলে সব মা-বাবাই সুস্হ হয়ে যায় বাবা”।
মা-বাবারা কখনোই নিজেদের অসুস্থতায় কাঁদে না, তাঁরা কাঁদে সন্তানদের দুঃখ-দুর্দশা, অসুস্হতায়। বেগম জিয়াকে প্রথম কাদঁতে দেখছিলাম সেই এক/এগার’র দুর্বিষহ দিনে। মঈন ইউ আহমদের কুশীলবরা সেদিন তারেক জিয়াকে চরম শারিরীক নির্যাতন চালিয়েছিলেন।বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল বেডে আহত পুত্রকে দেখে বেগম জিয়ার সে কি বুকফাটা কান্না! সে এক অকল্পনীয় হৃদয়বিদারক দৃশ্য! সন্তানদের জন্য মায়েরা সবকিছুই বিসর্জন দেন।বেগম জিয়াও সেদিন সামরিক সরকারের সব শর্ত মেনে নিয়েই তারেক জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠিয়েছিলেন।
তারেককেই কেন টার্গেট করা হয়েছিল সেদিন? তার উপর কেন সেনা শাসকদের লোমহর্ষক নির্যাতন? তারেকের কী এমন কাজে সেনাপ্রধান এতোই বেসামাল হয়েছিলেন? প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি কোন আক্রোশ কি তিনি তারেকের উপর ঝেড়ে কেঁশেছিলেন? কিছুই জানতে পারেনি দেশের মানুষ।
মঈন ইউ আহমদ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ট। তিনি ২০০১–২০০৫ সময়ে প্রধানমন্ত্রী কতৃক আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত নিয়োগপ্রাপ্ত হন। সাংবাদিক হিসাবে বাংলাদেশ দূতাবাসে (আবুধাবি)তাঁর সাথে আমার একবার সাক্ষাতও হয়েছিল। রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বেও তিনি মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। তার আগেই ২০০৬ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে মঈন ইউ আহমদকেই সেনাপ্রধানের দায়িত্বে নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি সরকারের মেয়াদ শেষ হলে এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপ্রতি ইয়াজ উদ্দীন নিজেই তত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে নেন। কিন্তু সে সরকার ভেঙ্গে গেলে যায়। রাষ্ট্রপতি আবারও তত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কাজ শুরু করেন। ডঃ মোঃ ইউনুসকেও রাজি করানোর চেষ্টা হয়,কিন্তু তিনি তত্বাবধায়ক প্রধানের দায়িত্ব নিতে অপারগতা জানান।এক সময় দায়িত্বে আসেন বাংলাদেশ ব্যান্কের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমেদ। তিনি তার তার সতীর্থদের নিয়ে কাজ শুরু করতেই ঘটলো বিপর্যয়,ক্ষমতার পালা বদল।
সবাইকে অবাক করে দিয়েই প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দীনের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে তিন বাহিনী প্রধান। কিন্তু কী কারনে বেগম জিয়ার নিয়োগপ্রাপ্ত সেনা প্রধান এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন–তা কেউই জানতে পারেনি। চারিদিকে কেবলই গুজব আর গুজব। গুজবের উপরই ভাসছিল বাংলাদেশ। আজ এ গুজব তো কাল আরেক গুজব। “সেনাবাহিনীতে কর্মরত গোলাম আজমের পু্ত্রই সেনা প্রধান হচ্ছেন”–এমন এক গুজবেই নাকি তিনবাহিনী প্রধান সেদিন বিএনপি-জামাত সরকারের উপর চড়াও হয়েছিলেন।
ক্ষমতা হাতে নিয়ে তারেক রহমানের উপরই যেন সব রাগ ঝেড়ে দিয়েছিলেন সেনা কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়,তারা বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকেও বছরকাল বন্দি করে রেখেছিলেন অস্হায়ী জেলখানায়। নেত্রীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছিলেন। সংস্কারের নামে তার অনুগত কুশীলবদের নিয়ে নয়ছয় করেই পার করেছিলেন ক্ষমতার দুই বছর।নির্বাচন দিয়ে সেই যে নির্বাসনে গেলেন, আর ফিরে আসেন নি।
ক্ষমতা কখনোই চিরস্থায়ী বিষয় নয়। জোয়ার-ভাটার এই দেশ নিয়ে জনশ্রুতি কম নেই। হিংসা-দম্ভোক্তি করে ক্ষমতা পাকাপোক্তির চিন্তাও কখনো ফলপ্রসূ হয়নি।
চিকিৎসার প্রয়োজনে নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবশেষে বিদেশে যাচ্ছেন—এটাই এখনকার “টক অব দি কান্ট্রি”। পরিবার পরিজনের সাথে তার অনাগত দিনগুলো মধুময় হোক, সময়গুলো কাটুক মহানন্দে। দেশনেত্রীর সার্বিক সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি।