প্রিয় পাঠকঃবৃহস্পতিবার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জীবন-জীবিকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অথচ জীবন-জীবিকার এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মধ্যবিত্তরা। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যবিত্তদের নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম। নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারিতে কর্ম হারিয়ে অনেকে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে পরবর্তীতে কাজ পেলেও তাদের আয় কমে গেছে। ফলে দারিদ্র্যের কাতারে চলে এসেছেন তারা। আবার অনেকে দারিদ্র্য থেকে অতি দারিদ্র্যে নেমে গেছেন। যারা কর্ম হারিয়ে নতুন দরিদ্র হয়েছেন তাদের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা দেখা যায়নি।
দেশের প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজেট তৈরিই হয় উচ্চবিত্তদের জন্য। আর একদম হত দরিদ্রদের জন্য। মাঝখানে মধ্যবিত্তরা হয় ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের জন্য বাজেটে কিছুই থাকে না। বাজেটে তাদের লাভও নেই ক্ষতিও নেই। তবে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হলে হয়তো কিছুটা উপকার পেতো। তা ছাড়া বাজেটে তাদের জন্য কোনো নির্দেশনা নেই।
সামগ্রিক বাজেট নিয়ে মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আকারে অনেক বড়। এই বাজেট মধ্যমানের সম্প্রসারণমূলক। তবে এই বাজেট বাস্তবায়নই হবে প্রধান সমস্যা। নিঃসন্দেহ বলতে পারি রাজস্ব আহরণ ও ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা কোনোভাবে বাস্তবায়ন হবে না। কারণ এবারের রাজস্ব আহরণের অবস্থা খুবই করুণ।
তিনি বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বাজেটে বেশকিছু প্রণোদনা ও ভর্তুকির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এগুলো পজেটিভ। বাজেট বাস্তবায়নে প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং প্রশাসন দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে।
তিনি বলেন, বাজেটে গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ আকার বৃদ্ধি করা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হচ্ছে ৭.২ শতাংশ। ফলে প্রস্তাবিত বাজেটকে মধ্যম মানের সম্প্রসারণমূলক বলা যায়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের বোনাস, সেটাও কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। কৃষিখাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এগুলো কিছুটা হলেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য। ব্যবসায়ীরা সবসময়ই চাইবেন কোনো কর না দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে কিন্তু আমি মনে করি অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জ্বালানি স্বল্পতা বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের সমস্যাগুলো বাজেটে কতটা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে তা বলা মুশকিল। তিনি আরো বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমাদের রাজস্ব আহরণের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।