প্রিয় পাঠকঃআবারও সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন পুরান ঢাকার হাকিমপুরী জর্দার ব্যবসায়ী মো. কাউছ মিয়া। এ নিয়ে টানা ১৫ বার সেরা করদাতা নির্বাচিত হলেন তিনি।অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ অধিশাখা-২ (কর) এর সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত জাহান নিসুর সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এনবিআরের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এবার সেরা করদাতার তালিকায় জ্যেষ্ঠ নাগরিক, ব্যবসায়ী, শিল্পীসহ ১৪১ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৬, কোম্পানি পর্যায়ে ৫৩ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ১২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেককে সম্মাননা ও ট্যাক্স কার্ড দেয়া হবে।
কাউছ মিয়া ১৯৯৮ সাল থেকেই দেশের সর্বোচ্চ করদাতার একজন। ৭৬ বছর বয়সী ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া ব্যাংক থেকে নেননি কোনো ঋণ। সরকারকে কর দিচ্ছেন ৫৪ বছর ধরে।
কাউছ মিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, যত দিন বেঁচে আছেন, ততদিন এভাবেই সেরা করদাতা হতে চান তিনি।
রাষ্ট্রকে দিয়ে কাউছ মিয়াও সম্মান পেয়েছেন। মুজিববর্ষে জাতীয় পর্যায়ে সেরা করদাতার সম্মাননা দেয়া হয় তাকে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঢাকা জেলার ‘কর বাহাদুর’ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় কাউছ মিয়াদের।
একেবারে তৃণমূল থেকে উঠে আসা এ ব্যবসায়ী সরকারকে কর দিতে শুরু করেন ১৯৬৮ সাল থেকে। ৬৩ বছর ধরে সততা, আন্তরিকতা ও স্বপ্রণোদনার স্বীকৃতিস্বরূপ কাউছকে জাতীয় রাজস্ব খাতের গুরুত্বপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড সিআইপি মর্যাদায় ভূষিত করা হয়।
কাউছ মিয়ার জন্ম ১৯৩১ সালের ২৬ আগস্ট চাঁদপুর শহরে। বাবা আব্বাস আলী মিয়া ব্যাপারী ও মা ফাতেমা খাতুন।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটে কাউছের। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কিশোর বয়সেই চাঁদপুর শহরে ব্যবসায়ী জীবনের শুরু।
২০ বছর ব্যবসা করার পর ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে এসে ব্যবসা শুরু করেন কাউছ মিয়া। জর্দা ব্যবসায় উত্থান হলেও বর্তমানে ৪০টি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তিনি। আগা নবাব দেউড়ীতে থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন তিনি।
এ বছর জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে মো. কাউছ মিয়ার পাশাপাশি খাজা তাজমহল, ফজলুর রহমান, এম সাহাবুদ্দিন আহমেদ ও ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার বদরুল হাসানকে সেরা করদাতা নির্বাচিত করা হয়েছে।