বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

আলোচনার কেন্দ্রে এখন ‘ইসকন’

আলোচনার কেন্দ্রে এখন 'ইসকন'

আলোচনার কেন্দ্রে এখন ‘ইসকন’

বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

 

 

৭৫ বার পড়া হয়েছে

প্রিয় পাঠকঃদেশে এখন আলোচনার কেন্দ্রে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ যা সংক্ষেপে ইসকন নামে পরিচিত।চট্টগ্রামে তাদের এক ধর্মীয় গুরুকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় এখন উত্তাল চট্টগ্রাম।সরকারের শীর্ষমহলও বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষনে নিয়েছে।

ইসকনের যাত্রা শুরু হয় ৫৮ বছর আগে। এর প্রতিষ্ঠাতা-আচার্য ছিলেন অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ১৯৬৬ সালের ১৩ জুলাই এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। ইসকন মূলত বৈষ্ণব ধর্মের একটি অংশ এবং ভগবান কৃষ্ণকে কেন্দ্র করে তাদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভক্তিযোগ বা কৃষ্ণভাবনামৃত সংস্কৃতি হাজার বছরের ধরে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু শ্রীল প্রভুপাদের অক্লান্ত চেষ্টায় এই অনন্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার বিশ্ববাসীর সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায়, লাখো মানুষ এর অনুসারী হন।

বর্তমানে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে সক্রিয় রয়েছে সংঘটি। এটির প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মন্দির নির্মাণ, ধর্মীয় উপদেশ দেয়া, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রচার, ভক্তি কার্যক্রম এবং দাতব্য সংস্থা পরিচালনা।

বাংলাদেশে যাত্রা: বাংলাদেশে ইসকন খুবই সক্রিয় এবং দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি মন্দির পরিচালনা করে। সত্তরের দশকের শুরুতে এই দেশে সংঘটির কার্যক্রম শুরু হয়। রাজধানী ঢাকার স্বামীবাগ মন্দির, যা বর্তমানে ইসকনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এটি সংগঠনটির প্রথম কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। ইসকনের বাংলাদেশ শাখা তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যেমন ধর্মপ্রচার, মন্দির পরিচালনা, এবং বার্ষিক রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন। স্বামীবাগ মন্দিরে ভক্তরা নিয়মিত কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করেন এবং ভগবানের সেবা করে থাকেন।

বাংলাদেশ ছাড়াও ইসকন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, মালয়েশিয়াসহ আরও অনেক দেশে সক্রিয় রয়েছে।
ইসকন একটি ধর্মীয় সংগঠন হলেও এটি মাঝেমধ্যে বিতর্কের মুখে পড়ে যায়। এর কারণের মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘুদের অধিকারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান। সংগঠনটি সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে যা অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সঙ্গে মতবিরোধ স্পষ্ট করে। কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠীর কট্টরপন্থীরা ইসকনের কার্যক্রমকে তাদের নিজস্ব মতাদর্শের জন্য হুমকি মনে করেন। এদিকে, ইসকনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনিয়মের পাশাপাশি নেতৃত্বে স্বার্থে আন্তঃসংঘাতের অভিযোগ উঠেছে।

তবে সমালোচনা এবং বিতর্ক সত্ত্বেও ইসকন অনেক দেশে তাদের ধর্মীয় এবং সামাজিক কাজের জন্য সমাদৃত এবং প্রশংসিত। বিশেষত তাদের বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি (ফুড ফর লাইফ) বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রশংসিত।

ইসকন কোন দেশে নিষিদ্ধ কী: ইসকন কিছু দেশে নিষিদ্ধ বা এদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি সাধারণত স্থানীয় রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতাদর্শের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে আরোপ করা হয়েছে। রাশিয়ার কয়েকটি অঞ্চলে ইসকনের কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। বিশেষত, তাদের শাস্ত্র এবং ধর্মীয় বই বিতরণ নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে।
কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের মতো মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে ইসকনের কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি জারি রয়েছে।

কিছু মুসলিমঅধ্যুষিত দেশে ইসকনের কার্যক্রমে বাধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে, তবে নিষিদ্ধ করা হয়নি। ইসকন বিশেষত হিন্দু বা সনাতন ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার পক্ষে সরব অবস্থানে রয়েছে। তারা প্রায়ই মন্দির ধ্বংস, মূর্তি অবমাননা, এবং সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়গুলোকে তথ্য-প্রমাণাদিসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরে।

ট্যাগ :

  • Sorry. No data so far.

  • Sorry. No data so far.

আরো পড়ুন